অনলাইন ডেস্ক :
দীর্ঘদিন ধরে পতনে থাকা দেশের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা ফেরার আভাস দেখা দিয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মূলধন লাভে কমানোয় বড় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঞ্চার হয়েছে। পাশাপাশি বেশির ভাগ কোম্পানির পজিটিভ আর্নিং প্রকাশিত হওয়ায় বাজারে কিছুটা আশাবাদ বেড়েছে। এ ছাড়া শেয়ারবাজার চাঙা করতে এবার ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিল পেতে যাচ্ছে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ ।

 

শেয়ারবাজারের স্টেকহোল্ডাররা মনে করছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি শেয়ারবাজারে সাপোর্ট প্রদান ও তারল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই যেসব বিনিয়োগকারী বর্তমান বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন, তারা এখন বাজারে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে আগ্রহী হতে পারেন।

 

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪৫.৪০ শতাংশ। আর ডিএসইর বাজারমূলধন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির দরও বেড়েছে।

সাপ্তাহিক তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহজুড়ে ২৪৪টি শেয়ারের বাজারমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১১২টি শেয়ারের বাজারমূল্য কমেছে। বাজারমূল্যের ভিত্তিতে ১৬টি সেক্টর এই সপ্তাহে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে টপ গেইনার ছিল পেপার, সিরামিক্স ও ভ্রমণ খাত। দুটি সেক্টর এই সপ্তাহে টপ লুজার। মূল্য ও লেনদেনের দিক থেকে সার্বিকভাবে ওরিয়ন ফার্মা সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল।

সপ্তাহ শেষে ডিএসইর প্রধান সূচকে

পয়েন্ট ফিরেছে ১১৬.৯৩ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচকে ৩৯.৪৯ পয়েন্ট, শরিয়াহ সূচকে ৪৩.০১ পয়েন্ট এবং এসএমই সূচকে ৪২.৭১ পয়েন্ট। গড়ে টাকায় লেনদেন ৪৫.৪০ শতাংশ বেড়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় ৯৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন বেড়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৪টির, দর কমেছে ১১১টির, দর অপরিবর্তিত ছিল ২৯টির এবং ১৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়নি।

গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪২.৬২ শতাংশ। শীর্ষ তালিকায় ওঠে আসা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে শাইনপুকুর সিরামিকসের ২৮.৮১ শতাংশ, আফতাব অটোমোবাইলসের ২৫.১৬ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ২৪.০১ শতাংশ, আরামিট সিমেন্টের ২২.৮১ শতাংশ, এনভয় টেক্সটাইলের ২১.৬৩ শতাংশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ২০.৫০ শতাংশ, ওরিয়ন ফার্মার ২০.৩৭ শতাংশ, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলসের ২০.০০ শতাংশ এবং ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের ২০.০০ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০.৫৩ শতাংশ কমেছে। দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে ফার্মা এইডসের ৮.৫৮ শতাংশ, শামপুর সুগার মিলসের ৮.১৫ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৭.৮৮ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৭.৩২ শতাংশ, রেউইক যজ্ঞেস্বরের ৭.২৭ শতাংশ, কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ৬.৯৮ শতাংশ, জিল বাংলা সুগার মিলসের ৬.৯৮ শতাংশ, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৬.৯৯ শতাংশ এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ৬.৮২ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সবগুলো সূচকই ইতিবাচক পথেই ছিল। সিএএসপিআই ২.৮৩ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ১.৮৬ শতাংশ, সিএসসিএক্স ২.৮৮ শতাংশ, সিএসআই ৩.৩৪ শতাংশ এবং এসএমই সূচক ১.৭৩ শতাংশ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। ৩১৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়, যার মধ্যে দর বেড়েছে ২৮৪টির, পতনে ছিল ৫৭টি এবং ১২টি কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল। ১ কোটি ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৯৭টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ ৫৯ হাজার ১২০ টাকায় । এখানে বাজার মূলধনে এ শ্রেণির কোম্পানির অংশীদারত্ব ৭০.৯৮ শতাংশ, বি শ্রেণির ১৯.৪৫ শতাংশ, এস শ্রেণির ৭.২৯ শতাংশ এবং জেড শ্রেণির কোম্পানির ২.৩২ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *